
আজকাল প্রথাগত শিক্ষার হার বাড়লেও নৈতিক ও পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব কিছুটা কমে যাচ্ছে বলে মনে হয়। আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, প্রযুক্তির অতিমাত্রায় ব্যবহার, পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে যাওয়া এবং সমাজে প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতার বৃদ্ধির কারণে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাশাপাশি, পরিবারে জবাবদিহিতার অভাবও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
নৈতিক শিক্ষা
নৈতিক শিক্ষা একজন ব্যক্তির চারিত্রিক গুণাবলির বিকাশ ঘটায়, সঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য করতে শেখায় এবং ন্যায়-অন্যায়ের বোধ তৈরি করে। আগে যখন কেউ কোনো অন্যায় করত বা ভুল করত, তখন শুধু পরিবার নয়, পাড়া-প্রতিবেশীরাও অধিকারবোধ থেকে সংশোধনমূলক শাসন করতেন। কিন্তু এখন এসব ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যেমন—অভিভাবকদের মধ্যে জবাবদিহিতার অভাব, ভুলকে প্রশ্রয় দেওয়া, এবং বাইরের কেউ ভুল ধরিয়ে দিলে উল্টো তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ইত্যাদি।
পারিবারিক শিক্ষা
পারিবারিক শিক্ষা হলো ব্যক্তির প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি, যা পরিবার থেকেই শুরু হয়। এটি ভালো মূল্যবোধ, শিষ্টাচার, শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্ববোধ ও সামাজিক আচরণ শেখায়। একসময় পরিবারে শিশুকে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে অভিভাবকরা সচেষ্ট থাকতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে যাওয়ায়, এই শিক্ষার গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। বয়সে বড়দের আপনি সন্মোধন করা, কারো কথায় যেন বেয়াদবি না হয় লক্ষ্য রাখা, সিনিয়রদের বা সন্মানি ব্যাক্তিদের নাম না নিয়ে, উনি বা তিনি বলে সম্বোধন করা এসব পরিবার বা শিক্ষকদের কাছে শেখানো হতো, এখন এখন লক্ষ করা যায় সে ওই ব্যাক্তি এসব উচ্চারন যা ভবিষ্যতের জন শুভকর নয়।
সমাধান ও করণীয়
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সময় কাটানোর পরিমাণ বাড়ানো,
ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের নৈতিকতা ও শিষ্টাচার শেখান্
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নৈতিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা,
সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চার ওপর গুরুত্ব দেওয়্
অভিভাবকদের নিজেদের মধ্যে জবাবদিহিতা তৈরি করা,
পাড়া প্রতিবেশি কেউ কোন অভিযোগ দিলে বাচ্চাদের সামনে হেসে উড়িয়ে না দিয়ে যাচাই করে ব্যাবস্থা নেয়া
নৈতিক ও পারিবারিক শিক্ষা সমাজের ভিত্তি শক্তিশালী করে। তাই এ বিষয়ে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।